1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
একে একে বেরিয়ে আসছে এনবিআরের ‘কালো বিড়াল’, কোথায় কী সম্পদ মুন্সীগঞ্জে রাস্তার পাগলকে বদলে দিলেন সেবায় মানবকল্যাণ টিম শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টায় এক যুবক আটক মুন্সীগঞ্জে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডিসি মতলব উত্তরে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চার পরিবার সমাজচ্যুত মুন্সীগঞ্জে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী আগমনে বিষয়ে যা বললেন এমপি মুন্সীগঞ্জে পদ্মায় প্রধানমন্ত্রী আগমনে জেলা পুলিশ সুপার ব্রিফিং মতিউরের চার ফ্ল্যাট ও জমি ক্রোকের নির্দেশ কয়রায় যৌতুক নির্যাতনের শিকার হয়ে ঘর ছাড়া মা -মেয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন হত্যা মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন ১ আগষ্ট

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা কয়েদিদের পণ্য কেনাবেচার ধুম

  • আপডেট সময় : রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৯৮ বার পঠিত

সোহেল কবির:-স্টাফ রিপোর্টারঃ-

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় কয়েদিদের হাতের তৈরি করা পণ্য কেনাবেচার ধুম পড়েছে। এসব পণ্য ক্রেতা দর্শনার্থীদের মধ্যে সাড়া পড়েছে। দেশের ৬৮টি কারাগারের কয়েদিদের তৈরি এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে নকশি কাঁথা, উলের তৈরি সুতা, পোশাক, প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থালি পণ্য, আসবাবপত্র, সুস্বাদু আচার, জুতা, মোড়া, ফুলদানি, পুঁতির, ফুলের ঝুড়ি, কুলা, ছুরি, নৌকা, ভ্যানিটি ব্যাগ, কাঠের বক্স ইত্যাদি। এছাড়া স্কুল ব্যাগ, গেঞ্জি, টি-শার্ট, পাপোশ, জলচৌকি, ঝাড়ু, পুতুল, লুছনি, লুঙ্গি, গামছা, দোলনা, বেডশিট, স্ট্রে, ডাল ঘুটনি, নাটাই, জুতা, একতারা, খেলনা, শাড়ি টিস্যুবক্স ও ড্রেসিংটেবিলসহ তিন শতাধিক ধরণের পণ্য রয়েছে। বাংলাদেশ জেলের উদ্যোগে দেওয়া স্টলে এসব পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
বিভিন্ন অপরাধে দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের হাতের তৈরি এসব পণ্য। তারা কারাগারে বসেই পণ্য তৈরি করছেন। কারাপণ্য হিসেবেই এসব পণ্য পরিচিত। বেশির ভাগই কারাগারের বিক্রয় কেন্দ্রে সবসময় পাওয়া যায়। প্রচার ও প্রসারের জন্য বাণিজ্য মেলায় কয়েদিদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। ক্রেতা দর্শনার্থীরাও স্টলে ভিড় করছেন। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
মেলার স্টলে পণ্যগুলো নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। এদের মধ্যে মোড়া ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, টি-শার্ট ২০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, নকঁশি কাঁথা ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা, পুতির ফুলের ঝুড়ি ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, শিংহাসন চেয়ার ৯৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, বেতের মোড়া ৯৫০ টাকা ১ হাজার ৮০০টাকা, শতরঞ্জি ২ হাজার ৮০০ টাকা ৬ হাজার ৩৭৭ টাকা, জামদানি শাড়ি ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে ২৫ টাকা শুরু করে ২৫ হাজার টাকা মূল্যের কারাপণ্য বিক্রি হচ্ছে। কাঠ, পাট, বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের দাম কম থাকায় বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।
এসব কারাপণ্য তৈরিতে সরকারি অর্থের যোগান দিয়ে কাঁচামাল কিনা হয়। জের কর্তৃপক্ষ কাঁচামাল কয়েদিদের মধ্যে সরবরাহ করে থাকেন। পণ্য বিক্রির লভ্যাংশের অর্ধেক সংশ্লিষ্ট কয়েদিদের মধ্যে প্রদান করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ি ব্যাংক একাউন্টে কিংবা বিকাশে পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হয়। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েদিরা কারাদন্ড শেষে বাড়ি ফিরে এ শিল্পে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাতে তারা খুব সহজেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমের কয়েদিদের পণ্য উৎপাদনে যুক্ত করা হচ্ছে। কয়েদিরা কারাদন্ড থেকে মুক্ত হলেও যেন তারা কাজের মধ্যে যুক্ত থাকতে পারে, সেজন্য কারা কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ নিয়েছে। তাতে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
যোশহর কেন্দ্রিয় কারাগারের জেলা পুলিশে কর্মরত ও স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি আখিনুর বলেন, মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের এসব কয়েদি শ্রমজীবি মানুষের জীবনের কথা শুনছেন। তাদের প্রতি সহমর্মি হচ্ছেন। কারাপণ্যের দাম কম থাকায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে বেশি।
বরিশাল কেন্দ্রিয় কারাগারের মহিলারক্ষী ও বিক্রয় প্রতিনিধি সায়েমা মীম বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কারাপণ্যের স্টলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। গৃহস্থালী ও নিত্য দিনের ব্যবহৃত পণ্য বিক্রি হচ্ছে প্রচুর।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বপরিবারে মেলায় ঘুরতে এসেছেন গৃহবধূ আফসানা মিষ্টি। তিনি বলেন, কারাপণ্যের গুণগত মান ভালো থাকায় বেশ কিছু পণ্য ক্রয় করেছি।
উত্তরা থেকে স্বপরিবারে মেলায় ঘুরতে এসেছেন হাবিবাতুস জুয়েনা। তিনি বলেন, কারাপণ্যগুলো নিপুণ হাতে তৈরি করা। মশ্রিণ ও সুন্দর হওয়ায় পণ্যগুলোর চাহিদা বেশ। বিশেষ করে নকশি কাঁথার তুলনা নেই। তাই নকশি কাঁথাসহ ৫ টি পণ্য ক্রয় করেছি।
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব লায়ন মোঃ হাবিবুর রহমান হারেজ তাঁর স্ত্রী জেকোরিয়া বেগমকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, মেলার পরিবেশ সুন্দর। নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় দিন দিন ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের মেলায় আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেলায় ন্যায্যমূল্যে কারাপণ্য বিক্রি হওয়ায় এ স্টলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। আমিও বেশ কিছু কারাপণ্য ক্রয় করের্ছি।
কাশিমপুর কেন্দ্রিয় কারাগার-২ এর ডেপুটি জেলার জাকির হাসান রিয়াল বলেন, কয়েদিদের মধ্যে পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কয়েদিরা নিজ নিজ এলাকার ঐতিহ্যবাহী পণ্য তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন। জেলখানায় থেকেও পরিবার পরিজনের দ্যায়ভার কিছুটা হলেও গ্রহণ করতে পারছেন। কারাপণ্য এখন ব্যবসায়িক দিক থেকে আলোর মুখ দেখছে। কয়েদিদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সিলেট কেন্দ্রিয় কারাগারের ডেপুটি জেলার নোবেল দেব বলেন, কয়েদিদের পুনরবাসিত ও স্বাবলম্বী করতে জেল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণ অন্যতম। কারাগার এখন বন্দিশালা নয়, সংশোধনাগার। সাজা মওকুফ হওয়ার পর কয়েদিরা ফিরে গিয়ে এখন স্বাবলম্বী হচ্ছে। তাতে অপরাধ প্রবনতা হ্রাস পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park