নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সিগঞ্জঃ-
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত ব্যক্তির নাম ফজল হক দেওয়ান (৩৮)। তিনি চরমুক্তারপুর গ্রামের নুরু দেওয়ানের ছেলে।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্ব কেন্দ্র করে একই গ্রামের মোশারফ হোসেনের সঙ্গে ফজল হকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফজল হককে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন মোশারফ। ফজলকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চরমুক্তারপুর গ্রামে ফজল হক ও মোশারফ হোসেন পক্ষের মধ্যে কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে সোমবার দুপুরের ফজল হক পক্ষের এক ব্যক্তিকে মারধর করেন মোশারফ পক্ষের লোকজন। এ বিষয়ে জানতে ফজল হক মোশারফের বাড়িতে যান। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল। একপর্যায়ে মোশারফ ধারালো ছুরি দিয়ে ফজলের পেটে আঘাত করেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরমুক্তারপুর গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফজলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রতিপক্ষ মোশারফ হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করেন ফজল হক পক্ষের লোকজন।
মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খাইরুল হাসান রাতে দৈনিক প্রতিদিনের বার্তাকে বলেন, মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সন্ধ্যায় কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে ফজল হকের বোনের জামাই বাদী হয়ে মোশারফসহ তিনজনকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছিলেন। সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।
এর আগে রোববার চরমুক্তারপুর গ্রামে আবদুল্লাহ রাঢ়ী (১৫) নামের এক কিশোরকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে গ্রামের কামাল দেওয়ানের বাড়ি থেকে কিশোরের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই গ্রামে দুই দিনে পৃথক দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
Leave a Reply