1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিপুণ কে, কি এবং কি করেন, তা তার নিজেরই ভেবে দেখা উচিৎ- ডিপজল মুন্সীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী মিরাপাড়া নির্মিত হচ্ছে মসজিদ ও কমপ্লেক্স এর নতুন চিত্র। তুষারধারায় চেয়ারম্যান সেন্টুর নির্দেশে প্যানেল চেয়ারম্যান অনামিকা আরসিসি রাস্তার কাজের শুভ উদ্বোধন করলেন  কয়রায় অসংক্রামক রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন নাইকো দুর্নীতি মামলা খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে সাবেক বাপেক্স এমডির সাক্ষ্য মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতায় অটিজম বিভাগে প্রথম স্হান অর্জন করেছেন,কয়রার রায়াত মুন্সীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটি সভায় কিশোর গ্যাং মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর ভূমিকা। ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ কর্তৃক মাদক সহ আটক -৭ লৌহজংয়ে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ ব্লক প্রদর্শনীর ধান কর্তণের শুভ উদ্বোধন

কয়রার অবিস্মরণীয় কীর্তি মসজিদকুড় মসজিদ অনন্য স্হাপত্য

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৩৬ বার পঠিত

মোক্তার হোসেন, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ-
——————————————–
দক্ষিণ খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী
ইউনিয়নের মসজিদকুড় মসজিদ অবিস্মরণীয় কীর্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। উপকূল ঘেঁষে সুন্দরবনের অভ্যন্তরের এই উপজেলার একটি গ্রাম মসজিদকুড়। সিডর আর আইলার কারণে কয়রা উপজেলা ব্যাপক পরিচিত হলেও খান জাহান (র.) স্মৃতিধন্য হয়ে মুসলিম বিশ্বে পরিচিত এই উপজেলার মসজিদকুড় গ্রামটি। এই গ্রামেই রয়েছে খান জাহানের স্মৃতি বহনকারী মসজিদ। স্থানীয় এলাকাবাসীসহ দূরদূরান্তের মানুষ আসেন এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে। ছোট ছোট ইট আর চুনসুড়কির গাথুনির অপরূপ সুন্দর মসজিদটির রয়েছে নয়টি গম্বুজ। মসজিদটির তিনপাশে তিনটি প্রবেশপথের সঙ্গে রয়েছে আরও ছয়টি ছোট প্রবেশ পথ। তবে এখন উত্তর ও দক্ষিণ দিকের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিয়ে শুধু পূর্ব দিকের প্রবেশ পথ দিয়েই মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেন। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি এখন রয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায়।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও স্থানীয় এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আমাদী ইউনিয়নের মসজিদকুড় মসজিদটি খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আমাদি ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদীর পূর্বদিকে অবস্থিত। মসজিদের চারকোণে ৪টি গোলাকার মিনার বা টারেট আছে। বিরাট আকারের মিনারগুলো ছাদের কার্নিশের ওপর উঠেনি। এগুলোকে ৪টি গোলাকার ও স্ফীত রেখা দ্বারা অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের বাইরের দেওয়াল দক্ষিণ, পূর্ব ও উত্তর দিকে পোড়ামাটির চিত্রফলক দ্বারা অলঙ্কৃত। খিলান ও কার্নিশের ওপরও একই অলঙ্করণের কাজ দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পদ্মফুল, মালা, বিলম্বিত রজ্জু ও ঘণ্ট।
মসজিদের অভ্যন্তরে আছে ৪টি প্রস্তরস্তম্ভ। ইটের তৈরি ভিত্তিবেদীর ওপর প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেকটি স্তম্ভ ২টি করে পাথরের সাহায্যে নির্মিত। পাথর দুটি ভিনড়ব মাপ ও ভিনড়ব জাতের। এক সময় এই স্তম্ভগুলোতে এলাকাবাসী তেল লাগিয়ে তা নিয়ে যেতেন। তাদের ধারণা ছিলো, এই তেল গায়ে মাখলে বা খেলে অনেক রোগব্যাধী থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। তেল মাখতে মাখতে স্তম্ভগুলো সরু হতে থাকায় পরবর্তীতে তা ইট-সিমেন্ট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এমনকি সেখানে বিভিন্ন ধরনের মানতও করা হতো।
প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের তথ্যে আরও জানা যায়, উচ্চতার সমতা রক্ষার জন্য নিচে ইটের তৈরি ভিত্তিবেদী কমবেশি উঁচু করে নির্মিত। এই ৪টি প্রস্তর স্তম্ভ ও চারদিকের দেওয়ালের ওপর খিলানের সাহায্যে নির্মিত হয়েছে মসজিদের ৯টি গম্বুজ। ভেতরের খিলান ও গম্বুজগুলোর নির্মাণ-কৌশল খুবই উঁচু মানের। কেন্দ্রীয় গম্বুজটি অন্যগুলোর চেয়ে আকারে কিছুটা বড়।
এই মসজিদে কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। বাগেরহাটের সুবিখ্যাত ষাটগম্বুজ ও নয়গম্বুজ মসজিদের সঙ্গে মসজিদকুড় মসজিদের গঠনপ্রণালী ও স্থাপত্যকৌশলের মিল রয়েছে। এ কারণে সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন যে এই মসজিদ অপর দুটি মসজিদের সমসাময়িক এবং খান-ই-জাহান কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। তবে স্থানীয়রা জানান, জনপ্রবাদের ওপর ভিত্তি করে বুড়াখা ও তার পুত্র ফতেখাঁকে মসজিদের নির্মাতা বলে ধরা হয়। তারা উভয়েই ছিলেন এই অঞ্চলের ইসলাম প্রচারক খান-ই-জাহানের সহচর।
খান-ই-জাহান একদল সঙ্গী নিয়ে বাগেরহাটের দিকে যান এবং তার অনুগত সহচর বুড়াখাঁর নেতৃত্বে একটি দলকে মসজিদকুড়, সুন্দরবনের অভ্যন্তরের অঞ্চলের দিকে পাঠান। যাওয়ার পথে তারাও খান-ই-জাহানের নির্দেশ ও দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে পথিমধ্যে স্থানে স্থানে জলাশয় খনন, রাস্তা ও মসজিদ নির্মাণ করেন। বুড়া খাঁ ও ফতেহ খাঁ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে তাদের স্থায়ী বসতি আমাদি গ্রামে ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এখানে তাদের দুজনেরই পাকা কবর ছিল বলে ইতিহাসবীদরা উল্লেখ করেছেন।
মসজিদকুড় গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, গ্রামের মুরুব্বিদের কাছ থেকে আমরা জেনেছি মসজিদকুড় গ্রামে পশ্চিম দিকে নদীর তীরে বুড়া খাঁ ও ফতে খাঁ উভয়ের কবর ছিল।
এই মসজিদের অপরূপ স্থাপত্যশৈলী দেখতে প্রতিদিনই এখানে আসেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তারা সময় পেলে নামাজও আদায় করেন এখানে। শুধু মুসলিমরাই নন, নানা ধর্মের লোকের সমাগম হয় এখানে।
উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন, মসজিদকুড় মসজিদটি এই অঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। যা ইসলাম প্রচারক খান জাহানের (র.) স্মৃতি বহন করছে। মসজিদটি এই অঞ্চলের গৌরব। এটি সংরক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park