1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতায় অটিজম বিভাগে প্রথম স্হান অর্জন করেছেন,কয়রার রায়াত মুন্সীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা কমিটি সভায় কিশোর গ্যাং মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর ভূমিকা। ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ কর্তৃক মাদক সহ আটক -৭ লৌহজংয়ে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ ব্লক প্রদর্শনীর ধান কর্তণের শুভ উদ্বোধন অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন কারাগারে রানীশংকৈলে,হিসাব রক্ষক বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উপলক্ষে ৩দিন ব্যাপী সেবা প্রাপ্তির শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত কদমতলী থানা প্রেসক্লাবের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন মুন্সীগঞ্জ ভোটকেন্দ্রে পুলিশের ওপর হামলা, ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা। মতিঝিলে নুরুর সামাজিক দায়িত্ববোধ ঠেকাতে সাবেক চাঁদাবাজ চক্রের ষড়যন্ত্র অব্যহত

লাখাই কৃষ্ণপুর গনহত্যা দিবস আজ।।

  • আপডেট সময় : সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৯৬ বার পঠিত

আশীষ দাশ গুপ্ত,হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ-

হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চল লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুর গণহত্যা’ দিবস ২০২৩ তবে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও এ হত্যাযজ্ঞের ঘটনাটি অনেকে জানেন না। এ হত্যাযজ্ঞে শহীদদের নাম সরকারিভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। গ্রামবাসী এ গণহত্যার সরকারি স্বীকৃতি চান।তবে শহীদদের স্মরণে গ্রামবাসী আজ নানা কর্মসূচি পালন করবেন। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার কৃষ্ণপুর গ্রামে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিস্তম্ভে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। আলোচনা সভা সবশেষে রয়েছে সংগীতানুষ্ঠান। ১৯৭১ সালের ১৮ ই সেপ্টেম্বর এই দিনে উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের এলাকা কৃষ্ণপুর গ্রামবাসীর উপর চালানো হয় নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ। সেই সঙ্গে চলে ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট রেহাই পাননি নারী পুরুষ শিশু সহ নিরীহ গ্রামবাসী লাইন দাঁড়িয়ে কষ্ণপুর একটি স্কুল সংলগ্ন দারগাবাবুর বাড়িতে ১২৭ জন নারী-পুরুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে ব্রাশফায়ার হত্যা করে উল্লাসে মেতে উঠেছিল পাকিস্তানী রাজাকার বাহিনীর দল। সেই সঙ্গে অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ পঙ্গুত্বও বরণ করে।জানা যায় ১৯৭১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাজাকাররা কৃষ্ণপুর গ্রামে গনহত্যা সংগঠিত করার উদ্দেশ্য কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার পাকিস্তানী ক্যাম্পে জড়ো হয়।১৭ সেপ্টেম্বর রাজাকাররা রাতে নৌকা, নিয়ে গ্রামটি ঘিরে ফেলে।১৮ সেপ্টেম্বর ভোর একটি স্পিডবোট সহ, ১০/১২টি নৌকা নিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে যোগ হয়ে স্থানীয় একদল রাজাকার-আলবদর বাহিনী কৃষ্ণপুর গ্রামে হত্যাযজ্ঞ চালায়। গ্রামে ঢুকে একটি দল গুলি ছুঁড়তে শুরু করে অন্য দলটি নৌকা পাহারা দিতে থাকে। তারা কোন কোন -বাড়িতে গিয়ে যুবতীদের ধর্ষন করে। এবং বন্দুকের মুখে গ্রামবাসীদের নগদ টাকা পয়সা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।যাবার পথে সৈন্যরা সারা গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়। অসহায় নিরস্র হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী পুরুষকে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হলে ১২৭ জন সঙ্গেসঙ্গেই নিহত হয়। বুলেটের আঘাতে জর্জরিত হয়েও হয়ে প্রাণে বেঁচে যান হরিদাশ অজ্ঞাত ৩ জন ।২০১০ সালের ৪ মার্চ বেঁচে যাওয়া হরিদাস রায় হবিগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মুড়াকরি গ্রামের রাজাকার লিয়াকত আলী এবং অন্যান্য রাজাকারদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।২০১০ সালের ১২ আগষ্ট কৃষ্ণপুর গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রথম মামলা হিসেবে সিলেট বিভাগ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গৃহীত হয়।

লিয়াকত আলী ও রজব আলীর বিরুদ্ধে ৭ অভিযোগে বিভিন্ন ধারায় হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও লুটপাটের সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ” আমি আল বদর বলছি” বইটিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত স্পেশাল ট্রাইবুনালে সম্পূরক তথ্য ও উপাত্ত হিসেবে আমলে নেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অষ্টগ্রাম থানার আলবদর নেতা আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী ও লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন।

গত ৩ জুলাই ২০২২ ঢাকা কলাবাগান এলাকা থেকে আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-২ । অন্যদিকে রাজাকার লিয়াকত আলী পালিয়ে গেছে আমরিকায়।

একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা অমলেন্দু লাল রায় বলেন, ‘বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলেও এখানকার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কিংবা মুক্তিযোদ্ধার পরিবার কেউই মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম নেই। এতে আমরা হতাশএকসঙ্গে সৎকারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পাশের নদী দিয়ে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় নারীরা।

কৃষ্ণপুরগ্রামের যুদ্ধাহত জ্ঞানেন্দ্র চন্দ্র রায় এর ছেলে শুভ রায় রিংকু জানান, যুদ্ধ যখন শুরু হয়,নিজ গ্রাম কে শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য আমার বাবা জ্ঞানেন্দ্র রায় সহ আরও বেশ কয়েক জন মিলে রাত্রে পাহারা দিত,১৯৭১ সালে র ১৮ ই সেপ্টেম্বর ভোর বেলা বাবা বাহিরে বইসা মহালয়া শুনছিলেন, এমন সময় পাক বাহিনী বাবাকে ধরে যদুনন্দন রায়ের বাড়িতে আরও অন্যান্য লোক জনের সাথে হাত পেছনে নিয়ে বেধে হাটুগালা দিয়ে বসায় এবং ব্রাসফায়ার শুরু করে পাক বাহিনী। জান বাচানোর জন্য বাবা উল্টি মারলে, কবুতরের ডানার মত দুটো হাত উপরে উঠে যায় এবং দুই হাতের তালু ছেদ করে গুলি বেরিয়ে যায়,বাবা অচেতন হয়ে মাটিতে পরে যায়, তারপর পাক বাহিনী যখন চলে যায়,গ্রামের মানুষ বাবাকে উদ্ধার করে, কোন রকমে জান বাচান।এবং উনার দুই হাতের চারটি আংগুল অচল হয়ে যায়, যতদিন বাচেন,এইভাবে দুই টি হাতের অচল আংগুল নিয়ে বেচে থাকেন।

দিবসটি উপলক্ষে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্মা নাহিদা সুলতানা জানান, কৃষ্ণপুর গ্রামবাসী ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পালন করার ব্যাবস্থা করা হবে। কৃষ্ণপুর বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ, কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। তিনি আরো বলেন জেলা প্রশাসক বা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি থাকতে পারে।

লাখাই থানার ওসি মোঃ নুনু মিয়া বলেন লাখাই থানার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park