1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
হাবিবুর রহমান মোল্লার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ রাজধানীর কদমতলী থানাধীন রায়েরবাগে চোরাই পিকআপ সহ তিন সক্রিয় চোরাই সদস্যকে আটক করেছে কদমতলী থানা পুলিশ আজ বিশ্ব মুক্ত-গণমাধ্যম দিবস রেন্টকারের ড্রাইবার কথিত সোর্স কানকাটা জাকির যখন রিপোর্টার পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা কর্মজীবনে যা বললেন অতিরিক্ত আইজিপি-মাহবুব টঙ্গীবাড়ীতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের উপর হামলা পথচারীদের জন্য ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা রাজধানী যাত্রাবাড়ী থেকে ১৫ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১০ ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি

‘আমাদের হয়তো না খেয়ে মরতে হবে’

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩
  • ১৭৫ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক:-
আর মাত্র দুই দিন বাকি রমজানের। তার আগেই সারাদেশের মতো ভোলায়ও নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগুনমূল্যে পুড়ছেন এ জেলার মানুষও। ছোলা, চিনি, চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মাংসসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া থাকায় ভোগান্তি কমছে না তাদের।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ও ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজারে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। দোকানিরা জানান, রমজানকে টার্গেট করে ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুত করায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

এদিকে অনিয়ন্ত্রিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও আয় বাড়েনি সাধারণ মানুষের। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ।

ভোলা জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোজায় বহুল ব্যবহৃত পণ্য খেজুর ও ছোলার দাম গত কয়েকদিনে দ্বিগুণ বেড়েছে। বাজারে গত এক মাসে ছোলার দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাসখানেক আগে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকা দরে, যা এখন ৯৫-১০০ টাকা। ছোলার সঙ্গে ছোলাবুটের দামও বেড়েছে ৫-১০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি ছোলাবুট বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাল কেজি প্রতি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৬৫ টাকা, মসুর ডাল ১০০ টাকা, ছোলার ডাল ৬৮ টাকা ও মুগ ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যাকেটজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৪৫-১৮০ টাকা। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় টাকা হালি। খোলা চিনির ক্ষেত্রে নির্ধারিত দাম ১০৭ টাকা হলেও এখনো খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।

এদিকে কাঁচামরিচ আবারও দামে হাঁকিয়েছে ডাবল সেঞ্চুরি। নিত্যদিনের রান্নায় অপরিহার্য পণ্যটি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। শীতের শেষেও ফুলকপি-বাঁধাকপি মিলছে না ৩০ টাকার কমে। করলাও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

অন্যদিকে মাছ-মাংস এখন অনেকটাই স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিশেষ করে মুরগির বাজারে এক-দেড় মাস ধরে অস্থির। একেক দিন হাঁকা হচ্ছে একেক দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৬০-২৯০ টাকায়, সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৭০-৩৮০ টাকা, লেয়ার কক ২৯০-৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৪০-৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চাষের তেলাপিয়া,পাঙাসও ২০০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।

ভোলা সদর পৌরসভা বাজারে কথা হয় পৌরসভার মুসলিম পাড়ার তানজিল নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘উচ্ছে (করলা) কেজি ২০০ টাকা। মরিচের কেজি প্রায় ২০০ টাকা। সব নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক, তাদের বাজার করে খেয়ে বেঁচে থাকার মতো উপায় থাকবে না। মাসে যে টাকা রোজগার করি, তা মাস না যেতেই শেষ হয়ে যায়। গরু ও খাসির মাংসের স্বাদ তো ভুলতেই বসেছি। মধ্যবিত্তের ব্রয়লার মুরগিরও দাম বেড়ে গেছে। খুব বেশি দিন নেই, আমাদের হয়তো না খেয়ে মরতে হবে।

চক বাজারের ব্যবসায়ী নাসির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমজান ঘনিয়ে আসছে। তাই তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজের চাহিদাও বেড়েছে। এক ধরনের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় রমজানের আগেই বেশি পরিমাণে কিনে ঘরে মজুত রাখছেন। এ কারণে বাজারে চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে।

বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলেন, আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আয় বাড়েনি অথচ সবকিছু ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে, যা কিনতে হাত দেই তাতেই আগুন। অর্ধেক বাজারে পকেট খালি করেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আকাশ ছোঁয়া এ দাম কোথায় গিয়ে থামে, তা নিয়েই এখন দরিদ্র ও নিম্নবিত্তের মানুষের যত চিন্তা।

বেসরকারি চাকরিজীবী ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আগে রমজান এলে একসঙ্গে দুই কেজি গরুর মাংস, কয়েকটা মুরগি চার-পাঁচ কেজি বড় মাছ কিনতাম, আজ শুধু একটা ব্রয়লার মুরগি কিনলাম (২৬০ টাকা কেজি দরে) ৪১০ টাকায়। এবার বাজারে মাছের দামও বেশি, গরু-খাসির কথা তো চিন্তাই করতে পারি না।

রতনপুর এলাকার রিকশাচালক মো. বারেক বলেন, আমাদের মতো গরিবের এই বাজারে সবজি কিনে খাওয়ার সামর্থ হারিয়েছে। দুইদিন আগের চেয়ে এখন দ্বিগুণ দাম সবকিছুতেই। আর মাছ-মাংস ত দূরের কথা।

ব্রয়লার ব্যবসায়ী শহিদ বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে প্রতিদিনই ১০-২০ টাকা করে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়ায় পাইকাররা। আমাদের বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।

এদিকে ডিম বিক্রেতা ইসমাইল বলেন, গত এক সপ্তাহে পোল্ট্রির ডিম এবং হাঁসের ডিমের দামও বেড়েছে। যে ডিম মানুষ কিনেছে ৮-৯ টাকা, তা এখন দিন গড়ালেই ১-২ টাকা করে বাড়ছে। বেচাকেনাও কমে যাচ্ছে। যে আগে ১০টা কিনত সে এখন কিনছে ৫টা।এভাবে চললে মানুষ কী খাবে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় লকডাউনের নামে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছেন। ফলে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে বাজার মনিটরিং করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।

সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সামনে রমজান মাস আসছে। ধর্ম বলেছে সংযমী হতে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা সেটি আবারও বলতে চাই, অন্তত এই মাসটাতে একটুখানি সংযমী হওয়া দরকার। আপনারা দয়া করে যেটি ন্যায্য হওয়া উচিত সেটাই করবেন। আমরা আপনাদের (ব্যবসায়িদের) সারাদিন ধরে পাহারা দিয়ে রাখতে পারব না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন দিয়ে গেলাম, আপনার যেটা ন্যায্য হয় সেটা করবেন।

এ ব্যাপারে ভোলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যাতে বৃদ্ধি পেতে না পারে সে জন্য বাজার মনিটরিং করা হবে। ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে অনেক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। রমজান সামনে রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park