1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন

নন্দন কাননে ফুল ফোটাতে পারবে বাংলাদেশ?

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৯৫ বার পঠিত

ভারত প্রতিনিধিঃ-

ধর্মীয় উৎসব শেষ হতেই ক্রিকেট উৎসবে শামিল হতে যাচ্ছে কলকাতাবাসী। ক্রিকেটের নন্দন কাননে শনিবার বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ দিয়ে কলকাতায় শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ আমেজ। হারের বৃত্তে আটকে থাকা বাংলাদেশ দল কি পারবে ক্রিকেটের নন্দন কাননে ফুল ফোটাতে?

কলকাতা উৎসবের শহর। বছরের বেশিরভাগ সময়টাতে এই শহরে উৎসব চলে। এই যেমন কলকাতার রাস্তায়, অলিতে গলিতে আলোক সজ্জা, রাস্তার দুই পাশে অনেক বাঁশের তোরণ দেখা মিলেছে। মনে হতে পারে বিশ্বকাপ ঘিরেই যেন এই আয়োজন। কিন্তু না, এই উৎসবের আবহ পুরোটাই দুর্গা পূজাকে ঘিরে। পুরো শহরই রঙিন আলোয় সেজেছিল, সবখানে নানা রকম ব্যানার-ফেস্টুন। এই উৎসবের বড় কার্যক্রমটা শেষ হলো শুক্রবার দুর্গা পূজার মধ্য দিয়ে। কলকাতা এবং শহরতলির শতাধিক পূজা কমিটি তাদের সুসজ্জিত ট্যাবলোয় দেবী প্রতিমা নিয়ে শামিল হন এই কার্নিভালে। সেই উৎসবে কলকাতাবাসী বিকাল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত শামিল ছিল।

বিশ্বকাপ শুরুর ২১ দিন পর ইডেনে এলো বিশ্বকাপ। দুর্গা উৎসবের পরেই শহরের বিশ্বকাপ ক্রিকেট। বলাই বাহুল্য ক্রীড়াপ্রেমী বাঙালি এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্যালেন্ডার যেন ব্যস্ত কোন সূচি! যদিও আনন্দের শহর কলকাতা ঘুরে বিশ্বকাপের আগমনী বার্তা পাওয়া না গেলেও প্রস্তুত নন্দন কানন খ্যাত ইডেন গার্ডেন্স। আগামী কয়েক সপ্তাহ ইডেন গার্ডেন্সে হবে বিশ্বকাপের বেশ কিছু ম্যাচ।

১৯৮৬ সালের পর ক্রিকেটের নন্দন কাননে ভারত বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে। এবার গ্রুপপর্বের চারটি ম্যাচ ছাড়াও একটি সেমিফাইনাল হবে এই মাঠে। শনিবার বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ দিয়ে যার শুরু। বাংলাদেশের ম্যাচ নিয়ে খুব বেশি আলেচনা না হলেও ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ নিয়ে এখনই কলকাতায় চলছে নানা আলোচনা!

অবশ্য কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা শনিবার ক্রিকেট উৎসবে সামিল হোক বা না হোক বাংলাদেশকে উৎসব করতেই হবে। নয়তো সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে আসা দলটির স্বপ্ন শনিবারই শেষ হয়ে যাবে। সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে ভারতে আসা দলটি টানা চার হারের পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া একমাত্র জয়টি ছাড়া কারও বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। ফলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে জয় দাঁড়িয়েছে ‘সোনার হরিণ’। তবে আজ অনেকটা সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই বাংলাদেশকে লড়তে হবে। তবু টানা হারের ফলে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের আত্মবিশ্বাস তলানীতে। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই মানসিক অস্বিস্ততে ভুগছে পুরো দল।

ইডেনে শুক্রবার পুরো দল অনুশীলন করেছে। ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সাকিবদের ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। অনুশীলনের আগে দলের সিনিয়র তিন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ মাঠেই গোল হয়ে আলোচনা করেছেন। ছোট-খাটো এই মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার- ডাচদের বিপক্ষে রণকৌশল সাজানো। এই সভাতে সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, একটি জয় পেলে এই দলটাকে অন্যরকম মনে হবে। সেই একটি জয়ের খোঁজে আজ ক্রিকেটের নন্দনকাননে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মাঠে নামবে সাকিবরা।

টানা হারের বৃত্তে আটকে থেকে বাংলাদেশ দল এখন অথৈ সাগরে। আগের ভেন্যুতে, আগের প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ তাদের শক্তি ও সামর্থ্য দেখাতে পারেননি। নতুন ভেন্যুতে নতুন আরও একটি দিনে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ শক্তি ও সামর্থ্যের প্রমাণ করে দেখানো। সেই আশাতেই এখন ইডেনে তেত্রিশ বছর পর নিজেদের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। কলকাতার এই মাঠে বাংলাদেশ এর আগে একটি ওয়ানডে খেলেছে। ১৯৯০ এশিয়া কাপের সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭১ রানে হেরেছে তারা। ৩৩ বছর পর সেমিফাইনালের লক্ষ্য নিয়ে আরও একবার বাংলাদেশ খেলতে নামছে। সেমির লক্ষ্য পূরণ কঠিন হলেও তাসকিন এখনও আশা দেখাচ্ছেন। শুক্রবার ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এই পেসার জানিয়ে গেছেন, ‘ইটস নট ফিনিশিড ইয়েট। এখনও চারটা ম্যাচ আছে। যদি চারটি ম্যাচ জিততে পারি যেকোনও কিছু্ হতে পারে। এখানে রান রেটের ইস্যু রয়েছে এবং আমরা যদি চারটা জিততে পারি তাহলে ভিন্ন গল্প হতে পারে।’

ইডেনে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের পর বাংলাদেশ খেলবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। এরপর দিল্লিতে শ্রীলঙ্কা ও পুনেতে শেষ ম্যাচে সাকিবদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। কতটা জিতলে, কী হবে; কীভাবে সেমিফাইনালে যাওয়া যাবে- এতসব সমীকরণ বাংলাদেশ দলের ভাবনাতে নেই। এই মুহূর্তে পুরো দলের ফোকাস নেদাল্যান্ডস ম্যাচ নিয়ে, ‘এই মুহূর্তে আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করছি। ব্যাটিং এবং বোলিংয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। যেহেতু চারটি ম্যাচ আছে আমরা সেগুলো ভালো খেলতে চাই।’

বিশ্বকাপে এর আগে একবারই নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে বাংলাদেশের। ২০১১ বিশ্বকাপে সহ-আয়োজক বাংলাদেশ চট্টগ্রামে ডাচদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে। তবে দলটির বিপক্ষে ওয়ানডেতে হারও আছে বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের বাইরে এই ফরম্যাটে একবারের সাক্ষাতে ২০১০ সালে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ উইকেট হারিয়ে দিয়েছিল ডাচরা। এখন বাংলাদেশ হারের মিছিল থেকে বেরিয়ে ডাচদের হারিয়ে লড়াইয়ে ফিরতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

তাসকিন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন ডাচদের বিপক্ষে লড়াইটা সহজ হবে না, ‘তারা কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারিয়েছে। ক্রিকেট খেলায় আসলে বলে জেতা কঠিন। আমরা আশাবাদী ভালো কিছু করবো। যেকোনও দলের সঙ্গেই জেতার সামর্থ্য আছে। কিন্তু দিনশেষে আমাদের ব্যাটিং, বোলিং সব জায়গাতে ভালো করতে হবে। আশাবাদী অবশ্যই ভালো ফলাফলের জন্য। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমাদের টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য। ইনশাল্লাহ আমরা সেরাটা দিয়ে জিতবো আশা করছি।’

ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের কথায় অবশ্য আত্মবিশ্বাসের সুর। হবেই না কেন? বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপে এসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তারা। এছাড়া বিচ্ছিন্ন কয়েকটি পারফরম্যান্সে ভয় দেখিয়েছে অন্যান্য প্রতিপক্ষকেও। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১০ সালে একটি জয় পাওয়া নেদারল্যান্ডস এবারও অঘটন ঘটাতে চাইবে বলার অপেক্ষা রাখে না। ডাচ অধিনায়ক সরাসরি কিছু না বললেও বাংলাদেশের ম্যাচকে ঘিরে দলটির ভাবনা এমনই। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে স্কট এডওয়ার্ডস বলেছেন, ‘প্রতিটি ম্যাচই আমরা জয়ের জন্য মাঠে নামছি। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রত্যেক ম্যাচেই সেই চেষ্টা ছিল। শেষ চার ম্যাচেও একই প্রচেষ্টা থাকবে। অবশ্যই সামনের ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক বড়। সেটি খেলতে উন্মুখ হয়ে আছি।’

প্রতিপক্ষ হিসেবে নেদাল্যান্ডস অনেক বড় দল না হলেও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও তাসকিন জানিয়ে গেছেন আগের পারফরম্যান্সের চেয়ে ১৫ ভাগ দিলেই ম্যাচ জিততে পারবেন তারা। এখন অপেক্ষা ৩৩ বছর পর ক্রিকেটের নন্দন কাননে খেলতে নেমে বাংলাদেশ হারের বৃত্ত ভাঙতে পারে কিনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park