সুজন চক্রবর্তী, আসাম ( ভারত) প্রতিনিধিঃ-
সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন টাইমস নাও নবভারত টাইমসের মহিলা সাংবাদিক ভাবনা কিশোর। গত ৫ ই মে তাঁকে একটি দুর্ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে ভারতের পাঞ্জাব পুলিশ। ভাবনা কিশোরের বিরুদ্ধে দুর্ঘটনার পরে জাতপাত তুলে অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ ও উঠেছে। এবার টাইমস নাও নবভারত টাইমসের এক মহিলা সাংবাদিক হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি গ্রুপ এডিটর নভিকা কুমার এবং উপস্থাপক সুশান্ত সিনহাকে বলেছেন যে পুলিশ তাঁকে শৌচালয়ের দরজা খোলা রেখে শৌচকর্ম করতে বাধ্য করেছিল। ভাবনার বক্তব্য, গ্রেফতারের দিন পুলিশ তাঁকে বলেছিল যে দুপুর ১ টায় ওই সাংবাদিকের মেডিক্যাল হবে। তারপর তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হবে। টাইমস নাও নবভারতের ওই সংবাদকর্মীর কথায়, ” আমার শরীর ভাল লাগছিল না, তাই আমি ওদের দেওয়া খাবার খেয়েছিলাম। ড্রাইভার ও ক্যামেরা পার্সন যারা ছিলেন তাঁরাও খেয়েছিলেন। আমার নার্ভাস লাগছিল, বারবার জল খাচ্ছিলাম। এরপর আমি যখন ওয়াশরুমে যাই তখন আমার সঙ্গে ২/৩ জন মহিলা কনস্টেবল ছিলেন। থানায় যেখানে আমাকে রাখা হয়েছিল সেখানে বিদ্যুৎ ও জল কোনওটাই ছিল না।” এরপরেই পুলিশি হেফাজতের সময় অসম্মানের বর্ণনা দিতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভাবনা। তিনি বলেন, ওয়াশরুমে দরজা ছিল না, তবুও আমাকে ওই শৌচালয় ব্যবহার করতেই বাধ্য করা হয়েছিল। আমি এতটাই মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম যে আমি লজ্জা পেতে ও বোধ হয় ভুলে গিয়েছিল। পরে রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাবনা কিশোরের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কর্তাদের সামনে মহিলা সাংবাদিক জানান, তিনি কোনও ভুল করেননি। ক্যামেরাপার্সন এবং ড্রাইভার ও নির্দোষ। সিসিটিভি দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে। তাঁদের তিনজনকেই অনুগ্রহ করে যেতে দেওয়া হোক। এই কথা শোনার পর ঊর্ধ্বতন কর্তারা জানান, তাঁরাও জানেন ভাবনা কিশোর এবং তাঁর সঙ্গীরা নির্দোষ। তাই এখন তাঁদের উচিৎ পুলিশকে সহযোগিতা করা। স্নানের জন্য অবশ্য ভাবনাকে অন্য বাথরুম দেওয়া হয়। কিন্তু মহিলা কনস্টেবলরা তাঁকে শর্ত দিয়েছিলেন তিনি অবশ্যই বাথরুমে স্নান করতে পারেন, কিন্তু দরজা বন্ধ করা যাবে না। এই প্রসঙ্গে ভাবনা কিশোর বলেছেন, আমি অসহায়বোধ করছিলাম। বাথরুমের দরজা খোলা ছিল, মনে হচ্ছিল মহিলা কনস্টেবলরা হয়তো তাকাচ্ছেন। আমি ভয় পাচ্ছিলাম, ভাবছিলাম আমি যে স্নান করছি তা সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে না তো। পাঞ্জাব পুলিশ গত ৫ ই মে টাইমস নাও নবভারতের সাংবাদিক ভাবনা কিশোরকে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করে। তাঁরা হলেন, মৃত্যুঞ্জয় কুমার এবং পরমিন্দর সিং। ্ পুলিশের কথায়, যে গাড়িতে করে তাঁরা যাচ্ছিলেন সেটি ধাক্কা দিয়ে এক মহিলাকে আহত করে। কর্তৃপক্ষের মতে, তিনজনের বিরুদ্ধে জাতিগত অপবাদ দিয়ে নির্যাতিতাকে গালি দেওয়ার অভিযোগ ও আনা হয়েছে। পুলিশ আইপিসির ২৭৯, ৩৩৭ এবং ৪২৭ ধারা এবং এসসি এবং এসটি আইনের ৩ এবং ৪ ধারার অধীনে মহিলা সাংবাদিক ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছে।
Leave a Reply