1. admin@dailypratidinerbarta.com : admin :
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন

শিকারে বেরিয়ে দলছাড়া, কীটপতঙ্গ খেয়ে জঙ্গলে কাটল ৩১ দিন

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩
  • ৫০ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট:-
পশু শিকার করা অনেকের কাছেই শখের কাজ। আর সেই শখ পূরণে বহু মানুষই এমন আছেন যারা গহীন জঙ্গলে যেতেও দ্বিধা করেন না। তেমনই এক ব্যক্তি গহীন জঙ্গলে শিকারে গিয়ে পড়েছিলেন বিপদে।

কয়েকজন মিলে শিকারে গিয়ে হলেন দলছুট। আর এরপর টানা ৩১ দিন কাটল সেখানে। কোনও খাবার না পেয়ে খেতে হলো কীটপতঙ্গ আর পোকামাকড়। এভাবেই কাটে ৩১ দিন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে আমাজন জঙ্গলের উত্তর বলিভিয়া অংশে। বুধবার (১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিকার করতে গিয়ে দলছুট হয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম জোনাটান অ্যাকোস্টা। চার বন্ধু মিলে উত্তর বলিভিয়ায় শিকারে গেলেও একপর্যায়ে ৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তার বন্ধুদের থেকে আলাদা হয়ে যান। এরপর টানা ৩১ দিন তিনি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিলেন এবং পোকামাকড় খেয়ে এসময় নিজেকে তিনি বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হন। পরে তাকে উদ্ধার করা হয়।

জোনাটান অ্যাকোস্টা বলছেন, জঙ্গলে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকার সময় তিনি তার জুতায় সংগৃহীত বৃষ্টির পানি পান করতেন এবং পোকামাকড় খেয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন। এছাড়া এই সময়ে তিনি জাগুয়ার এবং পেকারিজ – শূকরের মতো এক ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী – থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।

বিবিসি বলছে, অ্যাকোস্টা নিখোঁজ হওয়ার এক মাস পরে অবশেষে স্থানীয় লোক এবং বন্ধুদের নিয়ে গঠিত একটি অনুসন্ধান দল তাকে খুঁজে পায়। বন্ধুদের ফের ফিরে পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘এটি অবিশ্বাস্য, আমি বিশ্বাস করতে পারি না যে লোকেরা এত দিন আমার অনুসন্ধান চালিয়েছিল।’

ইউনিটেল টিভিকে তিনি বলেন, আমি কীটপতঙ্গ খেয়েছি, পোকামাকড় খেয়েছি, বেঁচে থাকার জন্য আমি এই সময়ে কী কী করেছি তা আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না। এছাড়া তিনি পেঁপের মতো এক ধরনের বন্য ফলও খেতেন, স্থানীয়ভাবে যা গার্গেটাস নামে পরিচিত।

অ্যাকোস্টার ভাষায়, ‘আমি সৃষ্টিকর্তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই, কারণ তিনি আমাকে একটি নতুন জীবন দিয়েছেন।’

৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তির পরিবার বলছে, জোনাটান ঠিক কীভাবে জঙ্গলে বন্ধুদের কাছ থেকে নিখোঁজ হলেন, কীভাবে এত দিন তিনি বেঁচে ছিলেন, এসব বিষয়ে এখনও কিছু জানতে পারেননি তারা। ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে এসব জানার চেষ্টা করা হবে। কারণ, ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার পর মানসিকভাবে অনেকটা বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছেন তিনি।

বিবিসি বলছে, জঙ্গলে ৩১ দিন থাকার সময় অ্যাকোস্টার ওজন কমেছে ১৭ কেজি। এছাড়া পায়ের গোড়ালিতে বড় আঘাত পাওয়ায় তার চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। জঙ্গলে খুঁজে পাওয়ার সময় অ্যাকোস্টা তৃষ্ণার্ত এবং আহত ছিলেন। যদিও আহত পা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে পারছিলেন তিনি।

হোরাসিও অ্যাকোস্টা বলিভিয়ার পেগিনা সিয়েট সংবাদপত্রকে বলেছেন, ‘আমার ভাই আমাদের বলেছেন- জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার চতুর্থ দিনে গোড়ালিতে আঘাত পান তিনি। আর এরপরই তিনি নিজের জীবন নিয়ে ভয় পেতে শুরু করেন।’

জোনাটানের ছোট ভাই হোরাসিও অ্যাকোস্টা আরও বলেছেন, ‘তার শটগানে শুধুমাত্র একটি কার্তুজ ছিল এবং তিনি হাঁটতে পারছিলেন না। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে, কেউ হয়তো তাকে আর খুঁজবে না।’

হোরাসিও অ্যাকোস্টা বলছেন, হারানোর ৩১ দিন পর তার ভাইকে চার স্থানীয় লোক খুঁজে পান। তার ভাষায়, ‘একজন লোক দৌড়ে এসে আমাদের জানালো যে তারা আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছে। এটা ছিল একটা অলৌকিক ঘটনা।’

এদিকে পুলিশ বলেছে, কীভাবে জোনাটান অ্যাকোস্টা তাদের থেকে আলাদা হয়ে গেল তা বুঝতে তারা বেঁচে যাওয়া চার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ © দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা ©
Theme Customized By Shakil IT Park